আশুরার রোজা কবে ২০২৪

Share on:
আশুরার রোজা কবে ২০২৪

ইসলামের পবিত্র মাস মহররমের দশম দিন আশুরা। এই দিনটি মুসলমানদের কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এতে ঘটেছিল ইতিহাসের বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব আশুরার রোজা কবে ২০২৪, এবং মুসলমানদের জন্য আশুরার রোজা পালনের নিয়মাবলী সম্পর্কে। এই আর্টিকেলটি আপনাদের আশুরা সম্পর্কে আরও জানতে সাহায্য করবে কীভাবে আশুরার রোজা পালন করতে হবে তা শিখতেও সাহায্য করবে।

কবে মহররম মাসের চাঁদ দেখা গেছে ২০২৪

দেশের আকাশে ৭ জুলাই (রবিবার) ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র মহররমের চাঁদ দেখা গিয়েছে। ফলে ৮ জুলাই (সোমবার) থেকে মহররম মাস গণনা শুরু হয়েছে। তাই ১৭ জুলাই যেহেতু মহররম মাসের ১০ তারিখ, তাই ১৭ জুলাই (বুধবার) পালিত হবে পবিত্র আশুরা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আশুরার রোজা কবে রাখতে হবে?

আশুরা কত তারিখে ২০২৪

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার রোজা নিজে রেখেছেন এবং উম্মতকে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আশুরার দিনে রোজা রাখেন এবং অন্যদেরও রোজা রাখার নির্দেশ দেন, তখন সাহাবিরা অবাক হয়ে বলেন, ‘হে আল্লাহর রসুল, ইহুদিরা তো এই দিনটিকে মহান দিন মনে করে। এ দিনে তারাও রোজা পালন করে। আমরা যদি এ দিনে রোজা রাখি তাহলে তো এদের সঙ্গে সামঞ্জস্য হবে।’ তাদের প্রশ্নের জবাবে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তারা যেহেতু এদিন একটি রোজা রাখে, আগামী বছর ১০ তারিখের সঙ্গে ৯ তারিখ মিলিয়ে দুই দিন রোজা পালন করবো, ইনশাআল্লাহ। (মুসলিম: ১১৩৪)

আরেক বর্ণনায় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ- 

“তোমরা আশুরার দিনে রোজা রাখো, তবে এ ক্ষেত্রে ইহুদিদের সঙ্গে মিল না হওয়ার জন্য ১০ তারিখের আগের দিন অথবা পরের দিন আরও একটি রোজা রেখো। (মুসনাদে আহমদ: ২১৫৪)”

আশুরার ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় তাৎপর্য

ইসলামী বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মহররমের দশম দিন আশুরা নামে পরিচিত। এই দিনটি ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এতে ঘটেছিল বহু স্মরণীয় ঘটনা।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলী:

  • কথিত আছে, এ দিনই আল্লাহ পৃথিবী সৃষ্টি করেন এবং এ দিনেই কেয়ামত সংঘটিত হবে।
  • হজরত আদম (আ.) সৃষ্টি ও জান্নাত থেকে দুনিয়ায় আসা, তাঁর তওবা কবুল ও হাওয়া (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাত – এসব ঘটনাও ঘটেছিল আশুরায়।
  • হজরত মুসা (আ.) ও তাঁর সম্প্রদায় বনি ইসরাইল ফেরাঊন এর অত্যাচার থেকে মুক্তি লাভ করে এই দিনে।
  • কারবালার শোকাবহ ঘটনা: ইসলামী ইতিহাসের সবচেয়ে করুণ ঘটনাগুলোর একটি ঘটেছিল আশুরায়। হজরত ইমাম হোসেন (রা.) ও তাঁর সঙ্গীরা ইসলামের সঠিক পথে টিকে থাকার জন্য ইয়াজিদ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে শাহাদাত বরণ করেন।

ধর্মীয় তাৎপর্য:

  • রোজা: মুসলিমরা সাধারণত আশুরার রোজা রাখে। যদিও রমজানের পর এটি বাধ্যতামূলক নয়, তবুও এটি একটি সম্মানিত সুন্নত।
  • শোক: মুসলিমরা কারবালার শহীদদের জন্য শোক প্রকাশ করে। যদিও কোনো বাড়াবাড়ি কিংবা আত্মআঘাতের অনুমতি নেই।
  • ধর্মীয় অনুষ্ঠান: কিছু মুসলিম সম্প্রদায় আশুরায় বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে।

আশুরা মুসলমানদের কাছে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় দুই ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ। এ দিনটি শুধু ঘটনাবলীর স্মরণ করার জন্য নয়, বরং ইসলামের শিক্ষা গ্রহণের এবং সৎ জীবনযাপনের জন্যও প্রেরণা যোগায়।

উপসংহার

আল্লাহ আমাদের সকলকে আশুরার রোজা সঠিকভাবে পালন করার তওফিক দান করুন আমীন। আশা করি আপনারা আমাদের আর্টিকেল থেকে আশুরার রোজা কবে ২০২৪ সে সম্বন্ধে ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে আমাদের সাথেই থাকবেন। ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site is protected by reCAPTCHA and the Google Privacy Policy and Terms of Service apply.

Related Posts

Disclaimer: All trademarks, logos, images, and brands are property of their respective owners. If you have any opinion or request or you find any bug/issues, please Contact Us