রবিউল আউয়াল – মুসলিম উম্মাহর কাছে অত্যন্ত পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। এই মাসেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন মানবতার শ্রেষ্ঠ দূত, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এবং এই মাসেই তিনি ইন্তেকাল করেন। এ কারণে মুসলমানদের কাছে এই মাসের গুরুত্ব অনেক বেশি। নবীজি জন্মগ্রহণের কারণে যেমন এই মাসের গুরুত্ব বেড়েছে, ঠিক তেমনি গুরুত্ব বেড়েছে সোমবার দিনেরও। এই আর্টিকেলে আমরা রবিউল আউয়াল মাসের বিশেষ ফজিলত এবং এই মাসে কোন কোন আমল করা উচিত, সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমরা জানতে চেষ্টা করব, কেন এই মাসটি মুসলিমদের জীবনে এত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই মাসে আমরা কীভাবে আল্লাহর রাসূলের প্রতি আমাদের ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারি। আমরা হাদিস ও সুন্নাহের আলোকে এই মাসের বিভিন্ন দিক তুলে ধরার চেষ্টা করব। এই আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনি রবিউল আউয়াল মাস সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পারবেন এবং এই মাসটিকে কীভাবে আরও ফলপ্রসূ করতে পারবেন, সে সম্পর্কে ধারণা পাবেন ইনশাআল্লাহ।
আরও পড়ুনঃ সফর মাসের ফজিলত ও আমল
রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
রবিউল আউয়াল মাস মুসলিম উম্মাহর কাছে অত্যন্ত পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। এই মাসটি বিশেষ মর্যাদা পেয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে:
(১) নবী করিম (সাঃ)-এর জন্ম:
এই মাসেই মানবতার শ্রেষ্ঠ দূত, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর আগমন মানবজাতির জন্য একটি বড় উপহার ছিল।
(২) রাসূল (সাঃ)-এর বিবাহ:
এই মাসেই রাসূল (সাঃ) খাদিজাতুল কুবরা (রাঃ) কে বিয়ে করেন। এই বিবাহ ইসলামী ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
(৩) প্রথম মসজিদ নির্মান:
মুসলিমদের জন্য প্রথম মসজিদ, কুবা মসজিদ, এই মাসেই নির্মিত হয়েছিল। এটি ইসলামের ইতিহাসে একটি মাইলফলক।
(৪) মদিনায় হিজরত:
রাসূল (সাঃ) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেছিলেন এই মাসে। এই হিজরত ইসলামের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
(৫) রিসালাতের সমাপ্তি:
রাসূল (সাঃ) এই মাসেই তাঁর রিসালাতের দায়িত্ব পালন শেষে দ্বীন-ইসলাম পূর্ণতার মাধ্যমে নিজের প্রভুর আহ্বানে সাড়া দেন।
রবিউল আওয়াল মাসের আমল
কোরআন ও হাদিসে রবিউল আউয়াল মাসের জন্য কোনো নির্দিষ্ট ইবাদতের বিধান না থাকলেও, মুসলিম উম্মাহ এই মাসটিকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে আসছে। এই মাসে কিছু নির্দিষ্ট আমল করা যেতে পারে, যা ইসলামের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ:
- নবীজির সিরাত আলোচনা: নবী করিম (সাঃ)-এর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে আলোচনা করা ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। নবীজির জন্মের ঘটনার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হলো তার জীবনাদর্শের অনুসরণ করা। জন্মের বিষয়টি একান্তই তার ব্যক্তিগত। কিন্তু তার সিরাত বা জীবনাদর্শ চর্চা সব যুগের, সব মানুষের জন্য। বিশ্ব মানবতার মুক্তির জন্য। আর নবীপ্রেমের প্রথম শর্ত হলো নবীর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা। বাস্তব জীবনে এর প্রতিফলন না ঘটলে নবীপ্রেমের দাবি অর্থহীন।
- রবিউল আউয়াল মাসে ইসলামবিরোধী কাজ পরিহার: এই মাসে ইসলামের বিরোধী কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকা জরুরি।
- সিয়াম পালন:
- আইয়ামে বিজ: হাদিসে প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে আইয়ামে বিজের তিনটি রোজা রাখার উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
- সোমবার ও বৃহস্পতিবার: নবীজি (সাঃ) সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। এই দিনগুলোতে রোজা রাখার অভ্যাস করা যেতে পারে।