আল-কুরআন হল মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ পবিত্র গ্রন্থ যা আমাদের জীবনযাপনের সকল ক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা প্রদান করে। এর প্রতিটি আয়াতই অপরিসীম জ্ঞান ও হিকমতের ধারক। সুরা হাশর হল কুরআনের ৫৯ তম সূরা, যাতে মোট ২৪ টি আয়াত রয়েছে। এই সূরার শেষ তিনটি আয়াত ফজিলতের জন্য বিশেষভাবে সমাদৃত। এই আর্টিকেলে আমরা সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করবো। আমরা জানবো এই আয়াতগুলো তিলাওয়াতের ফলে কী কী বরকত লাভ করা যায় এবং নিয়মিত আমল করার মাধ্যমে আমাদের জীবনে কীভাবে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।
আরও পড়ুনঃ সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত (বাংলা উচ্চারণ সহ)
সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত ( বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ)
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ (22) هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ (23) هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ [الحشر:22-24]
উচ্চারণ : হুআল্লাহুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়া, আলিমুল গাইবী ওয়াশ শাহাদাদি, হুয়ার রাহমানুর রাহিম। হুআল্লাহুল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। ছুবহানাল্লাহি আম্মা য়ুশরিকুন। হুআল্লাহুল খালিকুল বা-রিউল মুছাওয়িরু লাহুল আসমাউল হুসনা। ইউছাব্বিহু লাহু মা ফিস-সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্; ওয়া হুয়াল আজিজুল হাকিম।
অর্থ : ‘তিনিই আল্লাহ তাআলা, যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন, তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা।’ (২২) ‘তিনিই আল্লাহ তিনি ব্যতিত কোনো উপাস্য নেই। তিনিই একমাত্র মালিক, পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তাদাতা, আশ্রয়দাতা, পরাক্রান্ত, প্রতাপান্বিত, মাহাত্মশীল। তারা যাকে অংশীদার করে আল্লাহ তা’ আলা তা থেকে পবিত্র।’ (২৩) ‘তিনিই আল্লাহ তাআলা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নামগুলো তারই। নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে, সবই তার পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়।
সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত
মাকাল বিন ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সকাল বেলা তিনবার ‘আউজুবিল্লাহিস সামীয়িল আলীমি মিনাশ শাইতানির রাজীম’ পড়বে এবং এরপর সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত তিলাওয়াত করবে, তার জন্য আল্লাহ তাআলা সত্তর হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করবেন। তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য মাগফিরাতের দোয়া করবে। যদি এই ব্যক্তি এই সময়ের মধ্যে মারা যায়, সে শহীদের মর্যাদা লাভ করবে। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যার সময় এই আমল করবে, তার জন্যও একই সওয়াব রয়েছে।” (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩০৯০; আবু দাউদ, হাদিস: ২৯২২; মুসনাদ আহমদ, হাদিস: ১৯৭৯৫; কানজুল উম্মাল, হাদিস: ৩৫৯৭)
উপসংহার
সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত তিলাওয়াত একটি অত্যন্ত সহজ এবং ফলপ্রসূ আমল। নিয়মিত এই তিন আয়াত তিলাওয়াতের মাধ্যমে আমরা আমাদের ঈমানের শক্তি বৃদ্ধি করতে পারি এবং আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারি। মুসলমানদের উচিত নিয়মিতভাবে এই তিনটি আয়াত তেলাওয়াত করা, এর অর্থ বুঝে জ্ঞান অর্জন করা এবং স্ত্রী-সন্তানদেরও শেখানো। এই আয়াতগুলো তেলাওয়াতের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ ও জান্নাতের পথ সুগম করতে পারি। আমাদের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে আমাদের সাথেই থাকবেন। ধন্যবাদ।